এমনকি খোদ হ্যাকাররাও হতে পারেন সাইবার আক্রমণের শিকার। এই ঝুঁকি এড়াতে পেশাদার হ্যাকাররাও মেনে চলেন কিছু নিয়ম। তাদের পরামর্শ নিয়ে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি কমাতে কয়েকটি কার্যকর পদক্ষেপের ব্যাপারে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএন।
১. বন্ধ রাখুন মোবাইলের ওয়াই-ফাই এবং ব্লুটুথ-
ব্লুটুথ ও ওয়াই-ফাই ফিচারগুলো সবসময় চালু থাকলে ডিভাইসটি আগে কোন কোন নেটওয়ার্কের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে তা সহজেই জেনে নিতে পারে হ্যাকাররা। এরপর পরিচিত কোনো ব্লুটুথ বা ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের ছদ্মবেশে সহজেই ব্যবহারকারীর ডিভাইসের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারবে একজন হ্যাকার।
আর একবার সংযোগ স্থাপন করতে পারলে ওই ডিভাইস থেকে ডেটা চুরি, ম্যালওয়্যার ছড়ানো ইত্যাদি একেবারেই সহজ কাজ। এমনকি ব্যবহারকারীর অজান্তে তার উপর নজরদারিও করতে পারবে ওই হ্যাকার ।
২. ব্যবহার করুন টু-স্টেপ অথেনটিকেশন-
মোবাইল কিংবা সোশাল নেটওয়ার্ক অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেবল একটি পাসওয়ার্ড আর যথেষ্ট নয়। একাধিক ইন্টারনেটভিত্তিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এখন ‘টু-স্টেপ অথেনটিকেশন’ সেবা দিয়ে থাকে। আর এই সেবা ব্যবহারের পরামর্শই দিয়েছেন পেশাদার হ্যাকাররা।
‘টু-স্টেপ অথেনটিকেশন’ ফিচার ব্যবহার করে গুগল, টুইটার এবং লিংকডইনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। এই ফিচারটি চালু করা থাকলে নতুন কোনো ডিভাইস থেকে লগ-ইন করতে চাইলে ব্যবহারকারীর মোবাইল নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে চলে যায় একটি কোড। আর ওই কোড ছাড়া নতুন ডিভাইস থেকে অ্যাকসেস করা যায় না অ্যাকাউন্ট।
হ্যাকাররা কোনোভাবে পাসওয়ার্ড জানতে পারলেও নিজস্ব ডিভাইস থেকে ভুক্তভোগীর অ্যাকাউন্ট অ্যাকসেস করতে চাইলেই প্রয়োজন হবে ওই কোড। একই সঙ্গে পাসওয়ার্ড আর মোবাইল ডিভাইস হ্যাকাররের হাতে পরার আশঙ্কা খুবই কম।
৩.ব্যতিক্রমী পাসওয়ার্ডের ব্যবহার-
ব্যাংক এবং ইমেইল অ্যাকাউন্টগুলোর মতো যে সাইটগুলোতে আপনার স্পর্শকাতর তথ্য আছে সেই সাইটগুলোর জন্য জটিল ও ব্যতিক্রমী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। আর প্রতিবছর অন্তত একবার হলেও সকল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা জরুরী।
এছাড়াও ব্যবহার করা যেতে পারে ‘লাস্টপাস’ বা ‘পাসওয়ার্ড সেফ’ এর মতো পাসওয়ার্ড ম্যানেজার সফটওয়্যারগুলো। এতে একটি সফটওয়্যারেই জমা রাখা থাকে প্রয়োজনীয় সব পাসওয়ার্ড। আর পাসওয়ার্ডগুলো থাকে এনক্রিপ্টেড ডেটা হিসেবে।
৪.সব সাইটে ব্যবহার করুন HTTPS-
ব্রাউজারের এড্রেসবারে শুধু HTTP লেখা থাকলে যে কেউ নজরদারি করতে পারে ব্যবহারকারীর ব্রাউজিং সেশনের উপর।
এক্ষেত্রে ‘HTTPS Everywhere’টুল ইনস্টল করে নিতে পারেন কম্পিউটারে। ব্রাউজার ইন্টারনেট ও কম্পিউটারের মধ্যে যত ডেটা আদান-প্রদান করে তার সবই এনক্রিপ্ট করে এই টুলটি।
৫.বাসার ওয়াই-ফাইয়ে সাবধানতা-
রাউটারের স্টিকারে লেখা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না, নিজের পছন্দমতো পাসওয়ার্ড বানিয়ে নিন। এনক্রিপশন ‘সিকিউরিটি স্ট্যান্ডার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করুন WPA-2 । ‘WEP’ ও ‘WPA’ অপশনগুলো ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
৬.হোম ওয়াই-ফাই হাইড করবেন না-
নিজের ঘরের ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক হাইড করে রাখলে আপনার ডিভাইসগুলো ওয়াই-ফাই সংযোগের জন্য একটিভ নেটওয়ার্কের খোঁজ করে। এতে বেড়ে যায় ঝুঁকিপূর্ণ ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হওয়ার আশংকা।
৭.ইন্টারনেটভিত্তিক ডিভাইসে সতর্কতা-
হ্যাক হতে পারে ‘স্মার্ট ফ্রিজ’ বা ‘স্মার্ট ওভেন’-এর মতো ‘স্মার্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্সও’। ডিভাইসগুলোর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো এদেরকে নিরাপদ বললেও সাইবার নিরাপত্তা গবেষক স্ট্যানিস্লভের মতে, ডিভাইসগুলো পুরোপুরি নিরাপদ নয়। তাই ইন্টারনেট সংযোগ আছে এমন ‘স্মার্ট ফ্রিজ’ বা ‘স্মার্ট ওভেন’ কেনার সময় দ্বিতীয়বার ভেবে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন পেশাদার হ্যাকাররা।
No responses to হ্যাকিং এড়াতে হ্যাকারদের কয়েকটি পরামর্শ!সবার জানা উচিত
Be first Make a comment.